রসায়ন কাকে বলে ? রসায়নের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন ।
রসায়ন কাকে বলে ?
১ । রসায়ন হচ্ছে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা ।
২। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান হলো বিজ্ঞানের একটি শাখা ।
৩ । প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের কাজ হলো যুক্তি দিয়ে, পর্যবেক্ষন করে অথবা পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাকৃতিক কোনো বিষয় সম্পর্কে বোঝা বা তার ব্যাখ্যা দেওয়া বা সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাবাণী করা ।
৪ । রসায়নে পদার্থের গঠন, পদার্থের ধর্ম ও পদার্থের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে ।
তাই বলা যায় , প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থের গঠন, পদার্থের ধর্ম ও পদার্থের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে তাকে রসায়ন বলে ।
রসায়নের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন
.৫ । জীব এবং জড় উভয় ধরনের পদার্থ নিয়েই রসায়নে আলোচনা করা হয় ।
৬ । আল- কিমিয়া একটি আরবি শব্দ ।
৭। আলকেমি শব্দটি আল- কিমিয়া শব্দ থেকে ।
৮। আল- কিমিয়া শব্দটি এসেছে কিমি( Chemi বা Kimi) শব্দ থেকে ।
৯। Chemistry শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো রাসায়ন ।
১০ । Chemistry শব্দটি এসেছে Chemi শব্দ থেকে ।
১১ । মধ্যযুগীয় আরবের রসায়ন চর্চাকে আলকেমি বলা হয় ।
১২। মধ্যযুগীয় আরবের রসায়ন গবেষকদেরকে আলকেমিস্ট বলা হয় ।
১৩ । আলকেমিস্ট জাবির- ইবনে হাইয়ানকে রসায়নের জনক বলা হয় ।
১৪ । আলকেমিস্ট জাবির- ইবনে হাইয়ান সর্বপ্রথম গবেষণাগারে রসায়নের গবেষণা করেন ।
১৫ । অ্যান্টনি ল্যাভয়সিয়েকে আধুনিক রসায়নের জনক বলা ।
১৬ । অ্যান্টনি ল্যাভয়সিয়ে, রবার্ট বয়েল, স্যার ফ্রান্সিস বেকন ও জনডালটন হলেন রসায়ন গবেষক ।
১৭। কয়লার প্রধান উপাদান হলো কার্বন ।
১৮ । কয়লা পোড়ালে তাপ ও কার্বনডাই অক্সাইড গ্যাস তৈরি হয় ।
১৯ । সোনা হলো প্রথম ব্যবহৃত ধাতু ।
২০ । ব্রোঞ্জ একটি সংকর ধাতু ।
২১ । কপার ও টিন ধাতু দিয়ে ব্রোঞ্জ তৈরি ।
২২ । খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দের দিকে প্রথম ব্রোঞ্জ তৈরি করা হয় ।
২৩ । ডেমোক্রিটাস একজন গ্রিক দার্শনিক ।
২৪ । ডেমোক্রিটাস পদার্থের অবিভাজ্য ক্ষুদ্রতম কণাকে অ্যাটম বলেন ।
২৫ । অ্যাটম( snippet) শব্দের অর্থ অবিভাজ্য ।
২৬ । ডেমোক্রিটাস অ্যাটম( snippet) শব্দটি ব্যবহার করেন সর্বপ্রথম খ্রিস্টপূর্ব ৩৮০ অব্দের দিকে ।
২৭ । অ্যারিস্টটল ডেমোক্রিটাসের অ্যাটমের ধারণার বিরোধিতা করেছিলেন ।
২৮ । অ্যারিস্টটল মনে করতেন, সকল পদার্থ মাটি, পানি, আগুন ও বাতাস দিয়ে তৈরি ।
২৯ । কাঁচা আমে সাক্সিনিক এসিড, ম্যালিক এসিড ইত্যাদি জৈব এসিড থাকার কারণে কাঁচা আম টক লাগে ।
৩০ । পাকা আমে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে । তাই পাকা আম মিষ্টি লাগে ।
৩১। কার্বন ও হাইড্রোজেনের যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলে ।
৩২ । কেরোসিন, প্রাকৃতিক গ্যাস ও মোম এর মূল উপাদান হলো হাইড্রোকার্বন ।
৩৩ । পাকস্থলিতে অতিরিক্ত হাইড্রোক্লোরিক জমা হলে পেটে এসিডিটি হয় ।
৩৪ । পেটে এসিডিটির সমস্যা সমাধানের জন্য এন্টাসিড ঔষধ খাওয়া হয় ।
৩৫ । এন্টাসিডে থাকে এলুমিনিয়াম হাউড্রোক্সাইড, Al( OH) ৩ এবং ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড, Mg( OH) 2 ।
৩৬। মোমের দহনে কার্বনডাই অক্সাইড, জলীয়বাষ্প, আলো ও তাপশক্তির সৃষ্টি হয় ।
৩৭ । বায়ুর প্রধান উপাদান অক্সিজেন ।
৩৮ । খাবারের পানির প্রধান উপাদান পানিসহ ক্যালসিয়াম, ম্যাগ্নেসিয়াম ইত্যাদি ধাতুর লবন ।
৩৯ । রাসায়নিক সারের উপাদান্সমূহ হলো নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি । ৪২ । কাগজের মূল উপাদান সেলুলোজ ।
৪০ । বাঁশ, আখের ছোবড়া ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে সেলুলোজ থাকে ।
রসায়নের সাথে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার( জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত) সম্পর্ক
৪১। রসায়নের সাথে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সম্পর্ক আছে ।
৪২ । সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ রাসায়নিক পদার্থ গ্লুকোজ তৈরি করে ।
৪৩ । সালোকসংশ্লেষণ একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া ।
৪৪ । সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ মাটি থেকে রাসায়নিক পদার্থ পানি সংগ্রহ করে ।
৪৫ । সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ বায়ু থেকে রাসায়নিক পদার্থ কার্বনডাই অক্সাইড সংগ্রহ করে ।
৪৬ । পদার্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় বিদ্যুতের জন্য ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় যা রসায়নের অবদান ।
৪৭ । রসায়নের বিভিন্ন তত্ত্ব ও হিসাব- নিকাশ করা হয় গণিতের সূত্র ব্যবহার করে ।
৪৮ । জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত ছাড়াও বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সাথেও রসায়নের গভীর সম্পর্ক আছে ।
৪৯ । আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানোর পূর্ব পর্যন্ত যে জিনিসগুলো ব্যবহার করছি যেমন- পেস্ট, ব্রাশ, বিস্কুট, টয়লেট ক্লিনার, সাবান, শ্যাম্পু, লোশন, তৈল, চক ইত্যাদি সবই রসায়নের অবদান ।
৫০ । কীটনাশক দিয়ে ফসলের পোকা- মাকড় বিধন করা হয় ।
৫১ । Insectisides এর বাংলা প্রতিশব্দ কীটনাশক ।
৫২ । প্রিজারভেটিভস( prevatives) দিয়ে খাদ্যকে দীর্ঘ দিন সংরক্ষণ করা যায় ।
৫৩ । পারদ, লেড, আর্সেনিক, কোবাল্ট ইত্যাদিকে ভারী ধাতু বলা হয় ।
৫৪ । রাসায়নিক বর্জ্য যেমন- কার্বনডাই অক্সাইড, সালফারডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, বিভিন্ন এসিড এবং বিভিন্ন ভারী ধাতু আমাদের পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে থাকে ।
৫৫ । কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে ।
৫৬ । মানবজাতির কল্যাণসাধন করাই হলো বিজ্ঞানের লক্ষ্য ।
৫৭। সঠিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে কোনো কিছু জানার চেষ্টাই হচ্ছে গবেষণা ।
৫৮ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ধাপ হচ্ছে ৬টি ।
৫৯ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ১ম ধাপ হচ্ছে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা ।
৬০ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ২য় ধাপ হচ্ছে বই বা পূর্বের গবেষণাপত্রের সাহায্যে বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু ধারণা নেওয়া ।
৬১ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ৩য় ধাপ হচ্ছে প্রয়োজনীয় বস্তু ও পরীক্ষা প্রণালি নির্ধারণ করা ।
৬২ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ৪র ্থ ধাপ হচ্ছে পরীক্ষণ করা ।
৬৩ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ৫ম ধাপ হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ ও তথ্যের বিশ্লেষণ করা ।
৬৪ । রসায়নে অনুসন্ধান বা গবেষণা প্রক্রিয়ার ৬ষ ্ঠ ধাপ হচ্ছে ফলাফল ও ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা ।
৬৫। রসায়ন পরীক্ষাগার ব্যবহারে ও পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে ।
৬৬ । পরীক্ষাগার বা গবেষণাগারে বিজ্ঞানের বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা ও গবেষণা করা হয় ।
৬৭ । রসায়ন পরীক্ষাগার বা রসায়ন গবেষণাগারে রসায়নের পরীক্ষা- নিরীক্ষা বা গবেষণা করা হয় ।
৬৮ । রসায়ন পরীক্ষাগার বা রসায়ন গবেষণাগারে রসায়নের পরীক্ষা- নিরীক্ষা করার সময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে ।
৬৯ । রসায়ন পরীক্ষাগার বা রসায়ন গবেষণাগারে রসায়নের পরীক্ষা- নিরীক্ষা করার সময় শরীরকে রক্ষা করার জন্য নিরাপদ পোশাক বা অ্যাপ্রোন পরতে হবে ।
৭০ । অ্যাপ্রোনের রঙ সাদা । ৭৫ । অ্যাপ্রোনের হাতা হয় হাতের কবজি পর্যন্ত ।
৭১। অ্যাপ্রোন লম্বায় হয় হাটুর নীচ পর্যন্ত ।
৭২। রসায়ন পরীক্ষাগার বা রসায়ন গবেষণাগারে রসায়নের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় হাতকে সুরক্ষার জন্য হাতে হ্যান্ড গ্লাভস পরতে হবে ।
৭৩। রসায়ন পরীক্ষাগার বা রসায়ন গবেষণাগারে রসায়নের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় চোখকে সুরক্ষার জন্য চোখে সেফটি গগলস পরতে হবে ।
৭৪। রসায়ন পরীক্ষাগার বা রসায়ন গবেষণাগারে রাসায়নিক পদার্থের বোতল বা কৌটার লেবেলে পদার্থের ঝুঁকি বা ঝুঁকির মাত্রা বোঝানোর জন্য জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সর্বজনীন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় ।
৭৫। বিস্ফোরক পদার্থে আঘাত লাগলে বা আগুন লাগলে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হতে পারে ।
৭৬। টিএনটি, জৈব পার-অক্সাইড, নাইট্রোগ্লিসারিন ইত্যাদি বিস্ফোরক পদার্থ ।
৭৭। দাহ্য পদার্থে সহজেই আগুন ধরে যায় ।
৭৮। অ্যালকোহল, ইথার ইত্যাদি দাহ্য পদার্থ ।
৭৯। বিষাক্ত পদার্থ শরীরে লাগলে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয় ও শরীরের নানা ধরণের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে ।
৮০। বেনজিন, ক্লোরোবেনজিন, মিথানল এগুলো বিষাক্ত পদার্থ ।
৮১। উত্তেজক পদার্থ ত্বক, চোখ, শ্বাস্তন্ত্র উত্যাদির ক্ষতি করে থাকে ।
৮২। সিমেন্ট ডাস্ট, ক্ষার, লঘু এসিড, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি উত্তেজক পদার্থ ।
৮৩। বেনজিন, টলুইন, জাইলিন ইত্যাদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ । এগুলো শরীরের মধ্যে গেলে ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগ হতে পারে ।
৮৪। তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে ক্ষতিকারক তেজস্ক্রিয় রশ্মি বের হয় ।
৮৫। ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম ইত্যাদি তেজস্ক্রিয় পদার্থ ।
৮৬। ভারী ধাতু যেমন- লেড, মার্কারি ইত্যাদি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ ।
৮৭। হাইড্রোক্লোরিক এসিড, সালফিউরিক এসিড, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের ঘন দ্রবণ উত্যাদি ক্ষত সৃষ্টিকারী পদার্থ । এগুলো শরীরে লাগলে শরীরে ক্ষত সৃষ্টি করে ।
আজ এ পর্যন্তই । শিক্ষামূলক ভিডিও দেখতে আমাদের আমি শিখি ডটকম এর ইউটিউব চ্যানেলটি SUBSCRIBE করবেন । সবাই ভালো থাকবেন ।
আরও পড়ি-